শবে মিরাজ : একটি প্রামাণ্য বিশ্লেষণ
মিরাজ সম্পর্কে রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম এর হাদিস বর্ণনা রয়েছে মিরাজ সম্পর্কে কিছু হাদিস তুলে ধরা হলো বিস্তারিত আলোচনা
শবে মিরাজ ও তার বিধান নিয়ে আমরা বক্ষ্যমাণ এ আর্টিকেলটিতে পাঁচটি পয়েন্টে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি, এটি মনোযোগ সহকারে পড়লে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত অনেক ভ্রান্ত বিশ্বাস ও ভুল ধারণা ভেঙে যাবে। সাধারণ মুসলিমদের পাশাপাশি ইমাম ও খতিবদের আলোচনার জন্যও এটি সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ।
প্রথম কথা : তাহকিকের মানদণ্ড
রজব মাস আসলেই আমাদের দেশে রজবের দুআ, রজবের ফজিলত, রজবের রোজা, শবে মিরাজ, শবে মিরাজের আমল ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে যায়। বিভিন্ন রকমের জাল, মুনকার ও অগ্রহণযোগ্য হাদিস একত্রিত করে এসব প্রমাণ করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালায়। অনেক এমন আলোচকও দেখা যায়, যারা শুধু কোথাও ‘রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন’ কথাটি দেখলেই সেটাকে হাদিস বলে চালিয়ে দেয়। অনেকে আছে, যারা কোনো আরবি কিতাবে রাসুল সা.-এর নামে কোনো কিছু পেলেই সেটাকে হাদিস বলে মনে করে। অনেকে সনদযুক্ত সকল বর্ণনাকেই সঠিক হাদিস মনে করে। আবার অনেকে প্রসিদ্ধ কোনো হাদিসের গ্রন্থে হাদিস পেলেই সেটাকে বিশুদ্ধ বলে বিশ্বাস করে। অথচ এগুলোর কোনোটিই হাদিস যাচাইয়ের সঠিক পদ্ধতি নয়। উলুমুল হাদিস সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকলে কারও পক্ষে গ্রহণযোগ্য ও অগ্রহণযোগ্য হাদিস নির্ণয় করা অসম্ভবপ্রায়। শুধু সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম কিতাব দুটি ব্যতিক্রম। মুহাদ্দিসদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে এতে বর্ণিত সব হাদিসই বিশুদ্ধ। এছাড়া বাকি যত হাদিসের কিতাব আছে, কোনো কিতাবই পুরোপুরি বিশুদ্ধ হাদিসের নিশ্চয়তা দেয় না; বরং তাতে সহিহ, জইফ, মুনকার, এমনকি কোনো কোনোটিতে জাল হাদিসও চলে এসেছে। তাই হাদিস যাচাইয়ের ক্ষেত্রে পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
এমনটি শুধু রজব ও শবে মেরাজের ক্ষেত্রেই নয়; বরং শবে বরাত, শবে কদর, আশুরা, মিলাদুন্নবিসহ বিভিন্ন ধর্মীয় দিবসগুলোতেও আমরা এ ভুলগুলো দেখে আসছি। কেউ কোনোভাবে দুয়েকটি হাদিস আনলেও হাদিসের মান কী, এটা আদৌ গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের কিনা, সে বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার মতো পাঠক বা লেখক খুব কমই পাওয়া যায়। এজন্য আমাদের দেশে ইসলামের নামে অনৈসলামিক জিনিস গেলানো যতটা সহজ, আরববিশ্বে ততটা সহজ নয়। কারণ, ওখানকার অধিকাংশ লোক যাচাই-বাছাই করে কথা শোনে, মুখস্ত কথা বললেই মেনে নেয় না। সঠিক দলিল থাকলে সহজেই গ্রহণ করে, সে যে-ই হোক না কেন। আমাদেরও এমন মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি যে বাধার সম্মুখীন হতে হয়, তা হলো নবীনদের তাহকিকপূর্ণ কোনো কথা স্রেফ এ ভিত্তিতেই প্রত্যাখ্যান করা হয় যে, আমাদের অমুক আলিম তো এমন বলেনি! অথচ সেই অমুক এমন তাহকিক করার যোগ্যতাই রাখে না বা রাখলেও এ বিষয়ে তার তাহকিক করার সময় হয়ে ওঠে না। তদুপরি এ বিষয়ে এর বিপরীত দলিলসমৃদ্ধ কোনো লেখাও সে দেখাতে পারে না। তবুও সে নবীন আলিমের তাহকিকসমৃদ্ধ আর্টিকেল শুধু এজন্যই মানতে চায় না যে, অমুক বক্তা বা অমুক ইমাম সাহেব বা অমুক হুজুর তো এমন বলেন না! এই হলো আমাদের অধিকাংশ মানুষের মানসিকতা। এমন মানসিকতার দেশে সমাজের ধারণার বিপরীত নতুন তাহকিকপূর্ণ আর্টিকেল সাধারণত অকার্যকরই হয়ে থাকে। তবুও একটি পজেটিভ বিষয় বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, সবাই না হলেও কিছু সত্যসন্ধানী মানুষ ধীরে ধীরে উঠে আসছে, যারা মিথ্যার বিপরীতে সত্যকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত; যদিও তা তার পূর্বের লালিত চিন্তা-চেতনার বিরুদ্ধ হয়।
দ্বিতীয় কথা : শবে মিরাজের তারিখ নির্ধারণ
মূলত রাসুল সা.-এর মিরাজ নিয়ে কোনো মতানৈক্য নেই। এটি সুসাব্যস্ত একটি বিষয়। কিন্তু এটি কবে ঘটেছে, এ নিয়ে বিস্তর মতানৈক্য রয়েছে। কারও মতে হিজরতের পাঁচ বছর পূর্বে, কারও মতে তিন বছর পূর্বে, কারও মতে দেড় বছর পূর্বে, কারও মতে এক বছর পূর্বে, কারও মতে ছয় মাস পূর্বে। অনুরূপ কোন মাসে হয়েছে, এ নিয়েও অনেক মত পাওয়া যায়। কারও মতে রবিউল আওয়ালে, কারও মতে রবিউল আখিরে, কারও মতে রজবে, কারও মতে রমজানে আর কারও মতে শাওয়ালে। এভাবে দিন বা তারিখ নিয়েও অনেক মত পাওয়া যায়।
হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানি রহ. বলেন :
وَقَدِ اخْتُلِفَ فِي وَقْتِ الْمِعْرَاجِ فَقِيلَ كَانَ قَبْلَ الْمَبْعَثِ وَهُوَ شَاذٌّ إِلَّا إِنْ حُمِلَ عَلَى أَنَّهُ وَقَعَ حِينَئِذٍ فِي الْمَنَامِ كَمَا تَقَدَّمَ وَذَهَبَ الْأَكْثَرُ إِلَى أَنَّهُ كَانَ بَعْدَ الْمَبْعَثِ ثُمَّ اخْتَلَفُوا فَقِيلَ قَبْلَ الْهِجْرَةِ بِسَنَةٍ قَالَه بن سعد وَغَيره وَبِه جزم النَّوَوِيّ وَبَالغ بن حَزْمٍ فَنَقَلَ الْإِجْمَاعَ فِيهِ وَهُوَ مَرْدُودٌ فَإِنَّ فِي ذَلِكَ اخْتِلَافًا كَثِيرًا يَزِيدُ عَلَى عَشَرَةِ أَقْوَال مِنْهَا مَا حَكَاهُ بن الْجَوْزِيِّ أَنَّهُ كَانَ قَبْلَهَا بِثَمَانِيَةِ أَشْهُرٍ وَقِيلَ بِسِتَّةِ أَشْهُرٍ وَحَكَى هَذَا الثَّانِيَ أَبُو الرَّبِيعِ بن سَالم وَحكى بن حَزْمٍ مُقْتَضَى الَّذِي قَبْلَهُ لِأَنَّهُ قَالَ كَانَ فِي رَجَبٍ سَنَةَ اثْنَتَيْ عَشْرَةَ مِنَ النُّبُوَّةِ وَقِيلَ بِأَحَدَ عَشَرَ شَهْرًا جَزَمَ بِهِ إِبْرَاهِيمُ الْحَرْبِيُّ حَيْثُ قَالَ كَانَ فِي رَبِيعٍ الْآخِرِ قبل الْهِجْرَة بِسنة وَرجحه بن الْمُنِيرِ فِي شَرْحِ السِّيرَةِ لِابْنِ عَبْدِ الْبَرِّ وَقيل قبل الْهِجْرَة بِسنة وشهرين حَكَاهُ بن عَبْدِ الْبَرِّ وَقِيلَ قَبْلَهَا بِسَنَةٍ وَثَلَاثَةِ أَشْهُرٍ حَكَاهُ بن فَارِسٍ وَقِيلَ بِسَنَةٍ وَخَمْسَةِ أَشْهُرٍ قَالَهُ السُّدِّيُّ وَأَخْرَجَهُ مِنْ طَرِيقِهِ الطَّبَرِيُّ وَالْبَيْهَقِيُّ فَعَلَى هَذَا كَانَ فِي شَوَّالٍ أَوْ فِي رَمَضَانَ عَلَى إِلْغَاءِ الْكَسْرَيْنِ مِنْهُ وَمِنْ رَبِيعٍ الْأَوَّلِ وَبِهِ جَزَمَ الْوَاقِدِيُّ وَعَلَى ظَاهِرِهِ يَنْطَبِقُ مَا ذَكَرَهُ بن قُتَيْبَة وَحَكَاهُ بن عَبْدِ الْبَرِّ أَنَّهُ كَانَ قَبْلَهَا بِثَمَانِيَةَ عَشَرَ شهرا وَعند بن سعد عَن بن أَبِي سَبْرَةَ أَنَّهُ كَانَ فِي رَمَضَانَ قَبْلَ الْهِجْرَةِ بِثَمَانِيَةَ عَشَرَ شَهْرًا وَقِيلَ كَانَ فِي رَجَب حَكَاهُ بن عَبْدِ الْبَرِّ وَجَزَمَ بِهِ النَّوَوِيُّ فِي الرَّوْضَةِ وَقيل قبل الْهِجْرَة بِثَلَاث سِنِين حَكَاهُ بن الْأَثِيرِ وَحَكَى عِيَاضٌ وَتَبِعَهُ الْقُرْطُبِيُّ وَالنَّوَوِيُّ عَنِ الزُّهْرِيِّ أَنَّهُ كَانَ قَبْلَ الْهِجْرَةِ بِخَمْسِ سِنِينَ وَرَجَّحَهُ عِيَاضٌ وَمَنْ تَبِعَهُ.
‘মিরাজের সময় নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কারও মতে এটা নবুওয়াতের পূর্বেই হয়েছে। কিন্তু এটা অত্যন্ত দুর্বল ও বিচ্ছিন্ন মত। তবে স্বপ্নে দেখা উদ্দেশ্য নিলে ঠিক আছে; যেমনটি পূর্বে গত হয়েছে। আর অধিকাংশ ইতিহাসবিদের মতে এটা নবুওয়াতপ্রাপ্তির পরে হয়েছে। এরপর তারা আবার মতভেদ করেছেন। কারও মতে এটা হিজরতের এক বছর পূর্বে হয়েছে। ইমাম ইবনে সাদ রহ.-সহ প্রমূখ এমনই বলেছেন। ইমাম নববি রহ. এটাকেই চূড়ান্ত বলেছেন। আর ইমাম ইবনে হাজাম রহ. তো অতিরঞ্জিত করে এ মতের ব্যাপারে ইজমার দাবি করেছেন। কিন্তু ইজমার দাবি পুরোই ভুল। কেননা, এ ব্যাপারে দশেরও অধিক মত পাওয়া যায়, যার কয়েকটি ইমাম ইবনুল জাওজি রহ. বর্ণনা করেছেন যে, হিজরতের আট মাস পূর্বে মিরাজ সংঘটিত হয়েছে এবং কারও মতে ছয় মাস পূর্বে। এ দ্বিতীয় মতটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আবুর রবি বিন সালিম রহ.। আর এর পূর্বের উক্তির দাবিকৃত মতটি বর্ণনা করেছেন ইমাম ইবনে হাজাম রহ.। কেননা, তিনি বলেছেন, মিরাজ সংঘটিত হয়েছে নবুওয়াতের দ্বাদশ বছরের রজব মাসে। কারও মতে এগারো মাস আগে। ইমাম ইবরাহিম হারবি রহ. এটাকে চূড়ান্ত মত বলেছেন। কেননা, তিনি বলেছেন, মিরাজ সংঘটিত হয়েছে হিজরতে এক বছর পূর্বে রবিউল আখিরে। ইমাম ইবনে আব্দুল বার রহ. রচিত “আস-সিরাহ” এর ব্যাখ্যাগ্রন্থে ইমাম ইবনে মুনির রহ. এটাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। কারও মতে হিজরতের এক বছর দুমাস পূর্বে। ইমাম ইবনে আব্দুল বার রহ. এ মতটি বর্ণনা করেছেন। কারও মতে হিজরতের এক বছর তিন মাস পূর্বে। ইমাম ইবনে ফারিস রহ. এ মতটি বর্ণনা করেছেন। কারও মতে হিজরতের এক বছর পাঁচ মাস পূর্বে। ইমাম সুদ্দি রহ. এ মতটি বর্ণনা করেছেন। তার সূত্রে ইমাম তাবারি রহ. ও ইমাম বাইহাকি রহ. বর্ণনাটি রিওয়ায়াত (বর্ণনা) করেছেন। এ মতানুসারে মিরাজ সংঘটিত হয়েছে রমজানে অথবা রবিউল আওয়াল ও রমজানের ভগ্নাংশ দুটি বাদ দিলে শাওয়ালে। ইমাম ওয়াকিদি রহ. এ মতটিকে চূড়ান্ত বলেছেন। এ মতের সাথে মিলে যায় যা ইমাম কুরতুবি রহ. উল্লেখ করেছেন এবং ইমাম ইবনে আব্দুল বার রহ. বর্ণনা করেছেন যে, হিজরতের আঠারো মাস পূর্বে মিরাজ সংঘটিত হয়েছে। ইমাম ইবনে সাদ রহ.-এর বর্ণনায় ইবনে আবু সাবরা রহ. থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, মিরাজ হিজরতের আঠারো মাস পূর্বে রমজান মাসে সংঘটিত হয়েছে। কারও মতে মিরাজ রজব মাসে সংঘটিত হয়েছে, যা ইমাম ইবনে আব্দুল বার. বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম নববি রহ. তাঁর “রাওজাতুত তালিবিন”-এ চূড়ান্ত মত বলে অভিহিত করেছেন। কারও মতে হিজরতে তিন বছর পূর্বে মিরাজ সংঘটিত হয়েছে, যা ইমাম ইবনে আসির রহ. উল্লেখ করেছেন। কাজি ইয়াজ রহ. ও তাঁর অনুকরণে ইমাম কুরতুবি রহ. ও ইমাম নববি রহ. ইমাম জুহরি রহ. থেকে বর্ণনা করেন যে, এটা হিজরতের পাঁচ বছর পূর্বে সংঘটিত হয়েছে। কাজি ইয়াজ রহ. ও তাঁর অনুসারীরা এটাকে প্রাধান্য দিয়েছেন।’ (ফাতহুল বারি : ৭/২০৩, প্রকাশনী : দারুল মারিফা, বৈরুত)
ইমাম ইবনুল জাওজি রহ. বলেন :
وَاتَّفَقَ الْعُلَمَاءُ عَلَى أَنَّ هَذَا الْمِعْرَاجَ كَانَ بِمَكَّةَ قَبْلَ الْهِجْرَةِ، وَاخْتَلَفُوا فِي الْمُدَّةِ الَّتِي كَانَتْ بَيْنَهُمَا عَلَى أَرْبَعَةِ أَقْوَالٍ: أَحَدُهَا: سَنَةٌ قَالَهُ ابْنُ عَبَّاسٍ. وَالثَّانِي: سِتَّةُ أَشْهُرٍ. قَالَهُ السُّدِّيُّ. وَالثَّالِثُ: ثَمَانِيَةَ عَشَرَ شَهْرًا. قَالَهُ الْوَاقِدِيُّ. ذَكَرَ هَذِهِ الأَقْوَالَ عَنْهُمْ أَبُو حَفْصِ بْنُ شَاهِينَ. وَالرَّابِعُ: ثَمَانِيَةُ أَشْهُرٍ. فَأَمَّا الْهِجْرَةُ فَإِنَّهَا كَانَتْ فِي يَوْمِ الاثْنَيْنِ ثَانِي عَشَرَ رَبِيعِ الأَوَّلِ، أَعْنِي الْيَوْمَ الَّذِي قَدِمَ فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَدِينَةَ. فَعَلَى الْقَوْلِ الأَوَّلِ يَكُونُ الْمِعْرَاجُ فِي رَبِيعٍ الأَوَّلِ. وَعَلَى الثَّانِي وَالثَّالِثِ يَكُونُ فِي رَمَضَانَ. وَعَلَى الرَّابِعِ يَكُونُ فِي رجب. وقد ذكر محمد بن سعد عن الْوَاقِدِيُّ عَنْ أَشْيَاخٍ لَهُ قَالُوا: كَانَ الْمِعْرَاجُ لَيْلَةَ السَّبْتِ لِسَبْعَ عَشْرَةَ لَيْلَةً خَلَتْ مِنْ رَمَضَانَ قَبْلَ الْهِجْرَةِ بِثَمَانِيَةَ عَشَرَ شَهْرًا.
‘উলামায়ে কিরামের এ ব্যাপারে ঐকমত্য আছে যে, এ মিরাজ হিজরতের পূর্বে মক্কায় থাকাকালীন সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু হিজরত ও মিরাজের মধ্যবর্তী সময়ের ব্যাপারে তাদের চারটি মত রয়েছে। এক. এক বছর। এটা ইবনে আব্বাস রা.-এর মত। দুই. ছয় মাস। এটা সুদ্দি রহ.-এর মত। তিন. আঠারো মাস। এটা ইমাম ওয়াকিদি রহ.-এর মত। তাঁদের থেকে এ মতগুলো ইমাম আবু হাফস শাহিন রহ. উল্লেখ করেছেন। চার. আট মাস। এদিকে হিজরত হয়েছে রবিউল আউয়ালের দ্বাদশ দিবসে সোমবার। অর্থাৎ এদিনেই তিনি মদিনায় পৌঁছেন। সুতরাং প্রথম মতানুসারে মিরাজ রবিউল আওয়াল মাসে হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় মতানুসারে রমজান মাসে হয়েছে। আর চতুর্থ মতানুসারে রজব মাসে হয়েছে। ইমাম মুহাম্মাদ বিন সাদ রহ. ইমাম ওয়াকিদি রহ. সূত্রে তাঁর উস্তাদদের থেকে বর্ণনা করেন যে, তাঁরা বলেছেন, হিজরতের আঠারো মাস পূর্বে রমজানের সতেরো তারিখে রোববার রাতে মিরাজ সংঘটিত হয়।’ (আত-তাবসিরা, ইবনুল জাওজি : ২/৩৩-৩৪, প্রকাশনী : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা, বৈরুত)
ইমাম ইবনে রজব হাম্বলি রহ. বলেন :
وقد روي: أنه في شهر رجب حوادث عظيمة ولم يصح شيء من ذلك فروي: أن النبي صلى الله عليه وسلم ولد في أول ليلة منه وأنه بعث في السابع والعشرين منه وقيل: في الخامس والعشرين ولا يصح شيء من ذلك وروى بإسناد لا يصح عن القاسم بن محمد: أن الإسراء بالنبي صلى الله عليه وسلم كان في سابع وعشرين من رجب وانكر ذلك إبراهيم الحربي وغيره
‘বর্ণিত আছে যে, রজব মাসে অনেক বড় বড় ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, কিন্তু এর একটিও বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত নয়। যেমন বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সা. এ মাসের প্রথম রাতে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং এ মাসের সাতাশ তারিখে তিনি নবুওয়াতপ্রাপ্ত হন, কারও মতে পঁচিশ তারিখে। এর কোনোটিই বিশুদ্ধভাবে সাব্যস্ত নয়। অনুরূপ অশুদ্ধ সূত্রে কাসিম বিন মুহাম্মাদ রহ. থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সা.-এর মিরাজ রজবের সাতাশ তারিখে হয়েছে। ইমাম ইবরাহিম রহ.-সহ প্রমূখ এটা খণ্ডন করেছেন।’ (লাতায়িফুল মাআরিফ : ১২১, প্রকাশনী : দারু ইবনি হাজাম)
মূলত এগুলোর কোনোটির পক্ষেই প্রমাণযোগ্য কোনো বর্ণনা বা হাদিস পাওয়া যায় না। তাই নির্দিষ্টভাবে ২৭শে রজবকে শবে মিরাজ মনে করার কোনো অবকাশ নেই।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন :
هَذَا إِذَا كَانَتْ لَيْلَةُ الْإِسْرَاءِ تُعْرَفُ عَيْنُهَا، فَكَيْفَ وَلَمْ يَقُمْ دَلِيلٌ مَعْلُومٌ لَا عَلَى شَهْرِهَا وَلَا عَلَى عَشْرِهَا وَلَا عَلَى عَيْنِهَا، بَلِ النُّقُولُ فِي ذَلِكَ مُنْقَطِعَةٌ مُخْتَلِفَةٌ لَيْسَ فِيهَا مَا يُقْطَعُ بِهِ،
‘এটা তখনই ঠিক হতো, যখন মিরাজের রাত নির্দিষ্টভাবে জানা থাকত। অথচ এ ব্যাপারে সুনিশ্চিত কোনো প্রমাণ নেই, না এর মাসের ব্যাপারে, না এর দশকের ব্যাপারে আর না নির্দিষ্ট কোনো দিনের ব্যাপারে; বরং এ ব্যাপারে সকল বর্ণনাই সূত্রবিচ্ছিন্ন ও মতানৈক্যপূর্ণ, যার কোনোটিই সুনিশ্চিত নয়।’ (জাদুল মাআদ : ১/৫৮, প্রকাশনী : মুআসসাসাতুর রিসালা, বৈরুত)
সুতরাং শবে মিরাজ যেহেতু নির্দিষ্টভাবে নির্ধারিতই নয়, তাই বিশেষ কোনো রাতকে শবে মিরাজ বানিয়ে তাতে বিশেষভাবে ইবাদত করা বিদআত বা দ্বীনের মধ্যে নব আবিষ্কার বলে বিবেচিত হবে। আর শরিয়তে বিদআত জঘন্যতম একটি গুনাহ ও প্রত্যাখ্যাত কর্ম।
যেমন সহিহ বুখারির বর্ণনায় এসেছে :
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ القَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ، فَهُوَ رَدٌّ.
‘আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে আমাদের দ্বীনের মধ্যে এমন কিছু আবিষ্কার করল, যা দ্বীনের অংশ নয় তাহলে তা প্রত্যাখ্যাত।’ (সহিহুল বুখারি : ৩/১৮৪, হা. নং ২৬৯৭)
সহিহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে :
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا خَطَبَ احْمَرَّتْ عَيْنَاهُ، وَعَلَا صَوْتُهُ، وَاشْتَدَّ غَضَبُهُ، حَتَّى كَأَنَّهُ مُنْذِرُ جَيْشٍ… وَيَقُولُ: أَمَّا بَعْدُ، فَإِنَّ خَيْرَ الْحَدِيثِ كِتَابُ اللهِ، وَخَيْرُ الْهُدَى هُدَى مُحَمَّدٍ، وَشَرُّ الْأُمُورِ مُحْدَثَاتُهَا، وَكُلُّ بِدْعَةٍ ضَلَالَة.
‘জাবির বিন আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. যখন খুতবা (ভাষণ) দিতেন তখন তাঁর চক্ষুদ্বয় রক্তিম বর্ণ ধারণ করত, কণ্ঠস্বর জোরালো হতো, তাঁর রাগ বেড়ে যেত; এমনকি মনে হতো, তিনি যেন শত্রুবাহিনী সম্পর্কে সতর্ক করছেন …এবং বলতেন, সর্বনিকৃষ্ট কর্ম হলো বিদআত বা দ্বীনের নামে নবআবিস্কৃত কাজ। আর প্রত্যেক বিদআতই গোমরাহি।’ (সহিহু মুসলিম : ২/৫৯২, হা. নং ৮৬৭)
মোটকথা, শবে মিরাজ কবে সংঘটিত হয়েছে, এ ব্যাপারে নির্দিষ্টভাবে কোনো মাস বা তারিখ বলার সুযোগ নেই। শবে মিরাজ চূড়ান্তভাবে নির্দিষ্ট না হওয়া এটাই প্রমাণ করে যে, রাসুলুল্লাহ সা. ও তাঁর সাহাবায়ে কিরাম রা.-এর কাছে এ দিবস পালনের কোনো বিশেষত্ব বা গুরুত্ব ছিল না। আর এজন্যই নির্দিষ্টভাবে এর তারিখ নির্ণয় করা পরবর্তী লোকদের পক্ষে কঠিন হয়ে গেছে।
তৃতীয় কথা : মিরাজ স্বশরীরে নাকি স্বপ্নযোগে?
এ ব্যাপারে কিছুটা মতানৈক্য রয়েছে। আল্লামা ইবনে কাসির রহ. বলেন :
ثُمَّ اخْتَلَفَ النَّاسُ: هَلْ كَانَ الْإِسْرَاءُ بِبَدَنِهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَرُوحِهِ، أَوْ بِرُوحِهِ فَقَطْ؟ عَلَى قَوْلَيْنِ، فَالْأَكْثَرُونَ مِنَ الْعُلَمَاءِ عَلَى أَنَّهُ أُسْرِيَ بِبَدَنِهِ وَرُوحِهِ يَقَظَةً لا مناما، ولا ينكرون أَنْ يَكُونَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى قَبْلَ ذَلِكَ مَنَامًا ثُمَّ رَآهُ بعد يقظة،
‘এরপর লোকেদের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে যে, তাঁর মিরাজ কি দেহ ও রুহ উভয়টির মাধ্যমে হয়েছে নাকি শুধু রুহের মাধ্যমে। এখানে দুটি মত পাওয়া যায়। তবে অধিকাংশ উলামায়ে কিরামের মতানুসারে তাঁর মিরাজ দেহ ও রুহ উভয়টির মাধ্যমে জাগ্রত অবস্থায় সংঘটিত হয়েছে, স্বপ্নযোগে নয়। তারা এটাও অস্বীকার করেন না যে, রাসুলুল্লাহ সা. মিরাজের পূর্বে স্বপ্ন দেখেছিলেন এরপর জাগ্রত অবস্থায় বাস্তবেও সব দেখেছেন।’ (তাফসিরু ইবনি কাসির : ৫/৪০-৪১, প্রকাশনী : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা, বৈরুত)
সশরীরে হওয়ার কয়েকটি দলিল :
ক. আল্লাহ তাআলা সুরা বনি ইসরাইলে মিরাজের রাতের ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন :
سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلًا مِنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الْأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ
‘পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত, যার চারদিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি; যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দিই। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ০১)
আল্লাহ তাআলা এখানে ‘সুবহান’ শব্দ ব্যবহার করেছেন। আর এটা কেবল ওই সব ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ও মহান কোনো কিছু বুঝানো হয়ে থাকে। অতএব, রাসুলুল্লাহ সা.-এর মিরাজ যদি সশরীরে না হয়ে স্বপ্নযোগে হতো তাহলে তো এটা স্বাভাবিক বিষয় হতো, এতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সাব্যস্ত হতো না। কেননা, স্বপ্নে অনেক বিষয়ই দেখা যায়, যা বাস্তবে সম্ভব নয়। তাই স্বপ্নযোগে মিরাজ হয়ে থাকলে কুরআনে এখানে ‘সুবহান’ শব্দ ব্যবহার করাটা অনর্থক সাব্যস্ত হয়। একমাত্র সশরীরে মিরাজ হলে তবেই ‘সুবহান’ শব্দটির ব্যবহার এখানে যথার্থ হয়। কুরআনের এ ইঙ্গিত থেকে সাব্যস্ত হয় যে, রাসুলুল্লাহ সা.-এর মিরাজ সশরীরেই
হাফিজ ইবনে কাইয়িম জাওজিয়া রহ. বলেন :
وَكُلُّ حَدِيثٍ فِي ذِكْرِ صَوْمِ رَجَبٍ وَصَلاةِ بَعْضِ اللَّيَالِي فِيهِ فَهُوَ كَذِبٌ مُفْتَرًى كَحَدِيثِ مَنْ صَلَّى بَعْدَ الْمَغْرِبِ أَوَّلَ لَيْلَةٍ مِنْ رَجَبٍ عِشْرِينَ رَكْعَةً جَازَ عَلَى الصِّرَاطِ بِلا حِسَابٍ وَكُلُّ حَدِيثٍ فِي ذِكْرِ صَوْمِ رَجَبٍ وَصَلاةِ بَعْضِ اللَّيَالِي فِيهِ فَهُوَ كَذِبٌ مُفْتَرًى كَحَدِيثِ “مَنْ صَلَّى بَعْدَ الْمَغْرِبِ أَوَّلَ لَيْلَةٍ مِنْ رَجَبٍ عِشْرِينَ رَكْعَةً جَازَ عَلَى الصِّرَاطِ بِلا حِسَابٍ.
‘রজব মাসের রোজা ও এতে কিছু রাতের নামাজের ব্যাপারে বর্ণিত প্রতিটি হাদিসই মিথ্যা ও জাল। যেমন একটি হাদিস হলো, “যে ব্যক্তি রজবের প্রথম তারিখ রাতে বিশ রাকআত নামাজ পড়বে, সে বিনা হিসাবে পুলসিরাত পার হয়ে যাবে।”’ (আল-মানারুল মুনিফ : পৃ. নং ৯৬, প্রকাশনী : মাকতাবাতুল মাতবুআতির ইসলামিয়্যা, হালব)
হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানি রহ. বলেন :
لم يرد في فضل شهر رجب، ولا في صيام شيء منه معين، ولا في قيام ليلة مخصوصة فيه حديث صحيح يصلح للحجة.
‘রজব মাসের ফজিলত, এ মাসে নির্দিষ্ট রোজা ও নির্দিষ্ট রাতের নামাজ সম্পর্কে এমন কোনো বিশুদ্ধ হাদিস বর্ণিত হয়নি, যা দলিলের উপযুক্ত হতে পারে।’ (তাবয়িনুল আজব বিমা ওরাদা ফি শাহরি রজব : পৃ. নং ২৩)
শাইখ সাইয়িদ সাবিক রহ. বলেন :
وصيام رجب، ليس له فضل زائد على غيره من الشهور، إلا أنه من الاشهر الحرم. ولم يرد في السنة الصحيحة: أن للصيام فيه فضيلة بخصوصه، وأن ما جاء في ذلك مما لا ينتهض للاحتجاج به.
‘আর অন্যান্য মাসের রোজার তুলনায় রজবের রোজার অতিরিক্ত কোনো মর্যাদা নেই, তবে এতটুকু যে, রজব হলো হারাম বা মর্যাদাপূর্ণ মাসসমূহের একটি। বিশুদ্ধ হাদিসে এমনটা পাওয়া যায় না যে, রজব মাসে রোজার বিশেষ কোনো মর্যাদা আছে। এ ব্যাপারে যেসব বর্ণনা এসেছে, তার কোনোটিই দলিলের উপযোগী নয়।’ (ফিকহুস সুন্নাহ : ১/৪৫৩, প্রকাশনী : দারুল কিতাবিল আরাবিয়্যি, বৈরুত)
শাইখ ইবনে উসাইমিন রহ. বলেন :
ثم ابتدع الناس في هذه الليلة بدعاً لم تكن معروفة عند السلف، فصاروا يقيمون ليلة السابع والعشرين من رجب احتفالاً بهذه المناسبة، ولكن لم يصح أنها- أعني: ليلة الإسراء والمعراج- كانت في رجب، ولا أنها في ليلة سبع وعشرين منه، فهذه البدعة صارت خطأً على خطأ: خطأً من الناحية التاريخية؛ لأنها لم تصح أنها في سبع وعشرين من رجب، وخطأ من الناحية الدينية؛ لأنها بدعة، فإن الرسول صلى الله عليه وعلى آله وسلم لم يحتفل بها، ولا الخلفاء الراشدون، ولا الصحابة، ولا أئمة المسلمين من بعدهم.
‘অতঃপর লোকেরা এ রাতে অনেক বিদআত আবিষ্কার করেছে, যা সালাফে সালিহিনের সময় প্রচলিত ছিল না। তারা এ উপলক্ষে রজবের সাতাশ তারিখে শবে মিরাজ উদযাপন করে। অথচ মিরাজ যে রজব মাসে হয়েছে এবং এটা যে রজবের সাতাশ তারিখে; এর কোনোটিই প্রমাণিত নয়। অতএব, এ বিদআত ভুলের ওপর ভুল বলে গণ্য হয়েছে। এক তো ঐতিহাসিক ভুল; কেননা রজবের সাতাশ তারিখে শবে মিরাজ হওয়া প্রমাণিত নয়। আর দ্বিতীয়টি হলো দ্বীনি ভুল; কেননা এটা বিদআত বা নবআবিষ্কৃত। যেহেতু রাসুলুল্লাহ সা., খুলাফায়ে রাশিদিন, সাহাবায়ে কিরাম ও তাঁদের পরবর্তী ইমামগণের কেউই শবে মিরাজ উদযাপন করেননি।’ (ফাতাওয়া নুর আলাদ দারব : ৪/২, প্রকাশ : আল-মাকতাবাতুশ শামিলা)
ছিল। (দ্রষ্টব্য- তাফসিরু ইবনি কাসির : ৫/৪০-৪১, প্রকাশনী : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা, বৈরুত)
৪.বিবাহ সম্পর্কিত নির্বাচিত আয়াত সমূহ যা জানা একান্ত জরুরী
আমাদের সাইটে পোষ্ট গুলো যদি ভাল লাগে তাহলে শেয়ার করে
অন্যকে ও জানার তৌফিক দান করুন
আর আমাদের ফেসবুক পেইজ এ অবশ্যয় আপনি ১ টা লাইক দিবেন ।
আমাদের পোষ্ট গুলো পড়ার জন্য আপনাকে
অনেক অনেক মুবারক-বাদ । আবার নতুন পোষ্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হবো ইংশাআল্লাহ ।


No comments:
Post a Comment