রমজানের প্রথম খবর দিলে জাহান্নামের আগুন মাফ" এটি কি হাদীস সঠিক ?? - ইসলামিক আহবান

সর্বশেষ তথ্য

Post Top Ad

বিজ্ঞাপনের বিস্তারিত জানতে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনে ক্লিক করুন

বিজ্ঞাপন

বিস্তারিত জানতে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনে ক্লিক করুন

Wednesday, April 22, 2020

রমজানের প্রথম খবর দিলে জাহান্নামের আগুন মাফ" এটি কি হাদীস সঠিক ??




"রমজানের প্রথম খবর দিলে জাহান্নামের আগুন মাফ" এটি কি হাদীস?

ফতোয়া: মুফতি মেরাজ তাহসিন

ফতোয়া নং: ৪৮৬৪
তারিখ: ১২/৫/২০১৭
বিষয়: রোজা-ইতিকাফ
প্রশ্ন
অনেকদিন যাবৎ ফেসবুকে একটি হাদীস খুব প্রচার করা হচ্ছে ৷ পিকচার, ভিডিও বানিয়ে ইমুতে, ইনবক্সে ওয়াট্সঅ্যাপে সেন্ড করা হচ্ছে ৷ হাদিসটি হলো, "যে ব্যক্তি রমজানের খবর ১ম কাউকে দিবে, তার জাহান্নামের আগুন মাফ হয়ে যাবে"৷ জানার বিষয় হলো, এটা কি হাদিস? হাদীস হলে তার ব্যাখ্যা কি?
উত্তর
বহু হাদীসের কিতাব তালাশ করে, অসংখ্য কিবাতের ভান্ডার মাকতাবায়ে শামেলা তালাশ করে, ইন্টার্নেটে হাদীসের বিভিন্ন ওয়েব তালাশ করেও এধরনের হাদীসের অস্তিত্ব মিলে নি ৷ তাই উক্ত কথাটি যাচাই না করে হাদীস হিসেবে প্রচার করা চরম গর্হিত ও জঘন্নতম কাজের শামিল ৷ তাই তা প্রচার করা থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য ৷ কেননা রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “আমি যা বলিনি সেই কথা যে আমার নামে বলবে তার আবাস্থল হবে জাহান্নাম।
সহিহ বোখারী ১/৫২ ৷
অন্য হাদীসে হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্নিত রাসূল সঃ বলেছেন, যা শুনে তা'ই বলতে থাকা কোন ব্যক্তি মিথ্যুক হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট ৷
সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৯৯২ ৷ মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
টা হাদিসের নামে বানানো কথা, যার কোনো ভিত্তি নেই।

কয়েকদিন আগে ফেসবুকের ইনবক্সে একটি বার্তা পেলাম। 

তাতে লেখা ‘প্রথম রমজান শুরু হবে 25 এপ্রিল। নবী পাক (সা.) বলেছেন,
 রমজানের খবর যে লোক আগে অন্য কোনো ব্যক্তিকে দেবে তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যাবে; অতএব আপনিও রমজানের খবর আগে ভাগে অন্যকে দিয়ে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি লাভ করুন।’

এই বার্তার পর রমজানের সূচি দেওয়া। এমন বার্তার বিষয়ে জানলাম সহকর্মীর কাছ থেকেও। তাই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানার আগ্রহ হয়।
অনুসন্ধানে যা পেলাম তার সারমর্ম হলো- সবার আগে রমজান মাসের খবর দিলে, তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম হবে-এ ব্যাপারে কোনো দলিল বর্ণিত হয়নি। সুতরাং এ বার্তার কোনো ভিত্তি নেই। বরং এমন বার্তার আদান-প্রদান নিষিদ্ধ। কেননা, এমন বার্তা প্রচারের মাধ্যমে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর মিথ্যারোপ করা হচ্ছে।
অভিজ্ঞ ও অনুসন্ধানী ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো- যারা বিষয়টি হাদিস বলে মানুষের মাঝে প্রচার করছে, তা হাদিস নয়। এটা হাদিসের নামে বানানো কথা, যার কোনো ভিত্তি নেই।

সাধারণ নিয়মমতে রমজান মাস নির্ধারিত হবে দেশের নিযুক্ত চাঁদ দেখা কমিটির মাধ্যমে।
 আর এটা নির্ধারণ হবে শাবান মাসের শেষের দিকে। সুতরাং কোনো ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয় যে, সে শাবান মাসেই রমজান মাসকে দৃঢ়তার সঙ্গে নির্ধারণ করবে। তাই ইসলামি স্কলারদের পরামর্শ হলো, এ ধরনের মিথ্যা-বানোয়াট জাল ম্যাসেজ অন্যের কাছে প্রেরণের পূর্বে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করা, সত্যতা যাচাই করা।
মূল কথা- ‘সবার আগে রমজান মাসের খবর দিলে, তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম হবে’। এ ব্যাপারে কোনো প্রমাণ নেই। বরং এটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মনগড়া একটি কথা। যা ইহুদিরা তৈরি করে সাধারণ মুসলমানদের মাঝে ছেড়ে দিয়েছে যেন মুসলিমরা তাদের নবীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করতে পারে।

সুতরাং এ বার্তার কোনো ভিত্তি নেই। বরং এমন বার্তার আদান-প্রদান নিষিদ্ধ। কেননা, এমন বার্তা প্রচারের মাধ্যমে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর মিথ্যারোপ করা হচ্ছে। অার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করার কত ভয়াবহ শাস্তি তা অনেক মুসলমানেরই অজানা।
বিশুদ্ধ হাদীস শরিফে এসেছে- قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من كذب علي متعمدا فاليتبوؤ مقعده من النار
অর্থ: রাসুলুল্লাহ সা: বলেছেন, যে ব্যক্তি অামার বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত মিথ্যাচার করলো, সে যেন পরকালে জাহান্নামকেই তার ঠিকানা বানিয়ে নিলো।
(অাবু দাউদ শরীফ, হাদীস নং-৩৬৫১, ইবনে মাজাহ শরীফ, হাদীস নং-৩০, তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং-২৬৬১, নাসায়ী শরীফ, হাদীস নং-৫৯১৫, বুখারী শরীফ, হাদীস নং-১০৬, মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৪)

তবে রমজান মাসের আগমন উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানানো দোষণীয় কোনো বিষয় নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের রমজানের আগমন উপলক্ষে সুসংবাদ দিতেন এবং তাদের উত্তম আমলসমূহের জন্য প্রস্তুতি নিতে উৎসাহিত করতেন।
এ বিষয়ে একটি দীর্ঘ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, হজরত সালমান ফারসি (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, শাবান মাসের শেষ দিনে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন।
ওই ভাষণে তিনি বলেন, হে লোক সকল! একটি মহিমান্বিত মাস তোমাদেরকে ছায়া হয়ে ঘিরে ধরেছে। এ মাস একটি বরকাতময় মাস। এটি এমন এক মাস, যার একটি রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। আল্লাহতায়ালা এ মাসের সিয়ামকে ফরজ করেছেন আর নফল করে দিয়েছেন এ মাসে রাতের কিয়ামকে। যে ব্যক্তি এ মাসে একটি নফল কাজ করবে, সে যেন অন্য মাসের একটি ফরজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করল, সে যেন অন্য মাসের সত্তরটি ফরজ সম্পাদন করল। এ মাস সবরের (ধৈর্যের) মাস; সবরের সওয়াব জান্নাত। এ মাস সহমর্মিতার। এ এমন এক মাস যাতে মুমিনের রিজিক বৃদ্ধি করা হয়। যে ব্যক্তি এ মাসে কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, এ ইফতার তার গোনাহ মাফের কারণ হবে, হবে জাহান্নামের অগ্নিমুক্তির উপায়। তার সওয়াব হবে রোজাদারের অনুরূপ। অথচ তার (রোজাদার) সওয়াব একটুও কমানো হবে না।
আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসূল! 
 রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, এ সওয়াব আল্লাহতাআলা ওই ইফতার পরিবেশনকারীকেও প্রদান করবেন, যে একজন রোজাদারকে এক চুমুক দুধ, একটি খেজুর অথবা এক চুমুক পানি দিয়ে ইফতার করায়। আর যে ব্যক্তি একজন রোজাদারকে পেট ভরে খাইয়ে পরিতৃপ্ত করল, আল্লাহতায়ালা তাকে আমার হাউজে কাওসার থেকে এভাবে পানি খাইয়ে পরিতৃপ্ত করবেন- যার পর সে জান্নাতে (প্রবেশ করার পূর্বে) আর পিপাসার্ত হবে না। এমনকি সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
 এটা এমন এক মাস যার প্রথম অংশে রহমত। মধ্য অংশে মাগফিরাত আর শেষাংশে জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাত। যে ব্যক্তি এ মাসে তার অধীনস্তদের ভার-বোঝা সহজ করে দেবে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন। তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দেবেন।
-মিশকাতুল মাসাবিহ, কিতাবুস সাওম, হাদিস নং: ১৯৬৫


অসংখ্য জাল হাদিস আসলে এগুলো মূলত বানোয়াটি কথা এই কথাগুলো কোরআন হাদিসের অন্তর্ভুক্ত নয় মুসলিমদের ঈমান নষ্ট করার জন্য বিরোধীদের চক্রান্ত এগুলো কথা থেকে আপনারা এড়িয়ে চলুন আসলে এটা একটা মিথ্যা প্রচার এ ব্যাপারে হাদিস আমাদের সবাইকে সঠিক এবং সঠিকভাবে জ্ঞান অর্জন করার মত তৌফিক দান করুক


No comments:

Post Top Ad